প্রকৃতিকে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে দুইটি ফুল সেতা হচ্ছে শিমুল ও পলাশ। এই দুইটি ফুল যখন বনে ফুটে ওঠে তখন মনে হয় প্রকৃতি সিঁদুর রাঙ্গায় রাঙ্গিয়ে দিয়েছে। পলাশ ফুল আমাদের বাংলাদেশের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ফুল। কারণ এই ফুল যখন গাছে ফুটে ওঠে তখন চারিদিকের মানুষ সেই গাছের দিকে আকর্ষিত হয়। শুধু মানুষ নয় অন্যান্য পশুপাখি কীটপতঙ্গ পলাশ ফুলের দিকে তখন আকর্ষণ অনুভব করে।
এজন্য আমরা আমাদের সাহিত্যে অনেক কবি লেখক কে দেখেছি যে তারা এই পলাশ ফুলকে নিয়ে অনেক গল্প কবিতা গান উপন্যাস ইত্যাদি লিখেছেন। বিশেষ করে আমাদের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সেই 26 শে মার্চ বা ফাল্গুন মাসের সেই সময়টা যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন চারিদিকে যেমন প্রকৃতির রঙিন হয়েছিল তেমনি আমাদের ঘরবাড়ি দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবকিছুই পশ্চিমা হানাদার বাহিনীরা আগুন ধরিয়ে রাঙ্গিয়ে দিয়েছিল।
তাই মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যের সঙ্গে পলাশ শিমুলের অনেক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে ই মনে করা হয়। এবং সেই জন্যই দেখা যায় যে মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যের গল্প লিখতে গেলে শিমুল এবং পলাশ সবার প্রথমে চলে আসে। পলাশ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম হলো- Butea monosperma. পলাশ ফুল গাছ মাঝারি আকারের বর্ণমোচী বৃক্ষ। এই বৃক্ষ আমাদের দেশীয় বন জঙ্গলে একসময় প্রচুর পরিমাণে দেখা যেত।
কিন্তু বর্তমানে পলাশ ফুল গাছ খুব বেশি দেখা যায় এমন নয়। কৃষ্ণচূড়া গাছ এবং শিমুল গাছের মধ্যে পলাশ ফুল গাছ আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের উচিত হবে পলাশ শিমুল কৃষ্ণচূড়া যেহেতু আমাদের দেশীয় এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার ক্ষেত্রে এরা ব্যাপক ভূমিকা গ্রহণ করে তাই এ সকল কাজ যেন আমাদের প্রকৃতি থেকে হারিয়ে না যায় সেদিকে অবশ্যই আমাদের বন বিভাগকে খেয়াল করতে হবে।
পলাশ বৃক্ষটি Fabaceae পরিবারের সদস্য। তবে পলাশ গাছ ফুলের জন্যই বিখ্যাত বলে মনে করা হয়। এই গাছটি সর্বোচ্চ ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে বা উঁচু হয়ে থাকে। শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায় এজন্য একে পাতা ঝরা উদ্ভিদ বলেও গণ্য করা হয়ে থাকে। পলাশ ফুল গাছের বাকল ধূসর বর্ণের হয়ে থাকে। এই গাছটির কান্ড এবং শাখা প্রশাখা আকাবাকা রকমের হয়ে থাকে। যখন নতুন পাতা গজায় তখন এর এই পাতা দেখতে অনেকটা রেশমের মতো সূক্ষ্ম।
গারো সবুজ পাতা ত্রিপত্রী। এই পাতাগুলো দেখতে অনেকটা মান্দার গাছের পাতার মতো মনে হয় তবে এর পাতাগুলো মান্দার গাছের পাতার চাইতে আরো বড় হয়ে থাকে। সাধারণত আমরা দেখে থাকি যে পলাশ গাছে ফুল ফুটতে অনেক বেশি সময় নেয়। অর্থাৎ পলাশ ফুল গাছের ফুল ফুটতে অনেক বছর সময় প্রয়োজন হয়। সাধারণত বসন্তকালে এই পলাশ ফুল ফুটে থাকে।
আমাদের দেশের বসন্তকালের প্রাকৃতিক বৈচিত্র একেবারে অন্যরকম স্বদেশ সজ্জিত হয়ে থাকে। বসন্তকালের প্রকৃতিকে দেখলে অনেক প্রাণের অনুভূতি জাগে সকলের মধ্যেই। শীতকালের শীতের জন্য ছিন্ন দেহয় আর্মরা ভেঙ্গে নতুন ভাবে গজিয়ে ওঠে। তাই দেখা যাচ্ছে যে পলাশ ফুল বসন্তকালে ফোটে এবং এই ফুলের আকার সাধারণত ছোট ছোট ফুলগুলি একটি কাণ্ডে অনেকগুলি হয়ে থাকে। এবং যখন পলাশ ফুল সমস্ত গাছে ফুটে ওঠে তখন অনেক দূর থেকেও দেখা যায় বোঝা যায় বনের মধ্যে পলাশ ফুল গেছে পলাশ ফুল ফুটেছে।
এই ফুলের রং টকটকে লাল সারাও হলুদ ও লালচে কমলা রঙের হয়ে থাকে। সাধারণত আমাদের বাংলাদেশ ভারত নেপাল শ্রীলংকা মিয়ানমার থাইল্যান্ড লাশ কমেডিয়া ভারত ইত্যাদি অঞ্চলে পলাশ ফুলের গাছ জন্মে থাকে। তাহলে আপনারা যারা আজকে আমাদের এখান থেকে পলাশফুল কোন ঋতুতে ফোটে এই তথ্যটি জানার জন্য এসেছিলেন তারা অবশ্যই উত্তরটি পেয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। এ ধরনের যেকোন প্রশ্নের উত্তর অথবা অন্য যেকোনো তথ্য পাওয়ার জন্য আপনারা আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের সঙ্গে থাকবেন।
Leave a Reply