আমার দূর্গা কবিতা

আমার দূর্গা কবিতা

দুর্গা বলতে সাধারণত সনাতনী মহামায়া দেবী দুর্গাকে বোঝানো হয়ে থাকে। দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হলো বাঙ্গালী সনাতনীদের সবচাইতে বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবের জন্য বাঙালি সনাতনী বা হিন্দুরা ১১ মাস অপেক্ষা করে থাকে। দুর্গাপূজা সারা বিশ্বে অর্থাৎ যেখানে যেখানে বাঙালি হিন্দু বাসনতনি রয়েছে সেখানেই দুর্গাপূজা প্রচলিত রয়েছে। বর্তমানে শরৎকালের আশ্বিন মাসে যে দুর্গাপূজা করা হয় তাকে অকালবোধন বলা হয়ে থাকে। রামচন্দ্র রাবণের সঙ্গে যখন যুদ্ধে লিপ্ত হয় সেই যুদ্ধে জয় প্রাক্কালে বা রাবণ বধের পূর্বে তিনি দেবী মহামায়া কে অকালে বোধন করেছিলেন বা জাগ্রত করেছিলেন।

সেজন্য শরৎকালের দুর্গাপূজাকে অকাল্বধন বলা হয়ে থাকে। এছাড়া এটি বাংলা বৎসরের শেষ মাস অর্থাৎ চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে যে দুর্গাপূজা হয়ে থাকে সেটিকে বাসন্তী পূজা হিসেবে বা বাসন্তী উৎসব হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। তবে আরও বিভিন্ন নামে বিভিন্ন সময় এই দেবী দুর্গা বা মহামায়া কে পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মালম্বীরা।
তবে আজকে যে আমার দুর্গা কবিতা সম্পর্কে আপনারা জানতে এসেছেন তা এখন আমরা আলোচনা করতে পারি।

এই দেবী দুর্গাকে মনে করে বা হিন্দু শাস্ত্রের দেবী দুর্গাকে অবলম্বন করে বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন সময় দুর্গা কবিতা বা বিভিন্ন নাম দিয়ে কবিতা রচনা করেছেন। মলম্বে রা যে প্রতিটি নারী শক্তিকে দুর্গা দেবীর শক্তিরূপে দেখে থাকেন এই বিষয়টি বিভিন্নভাবে আলোচনা করেছেন বিভিন্ন সময়ে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমার দুর্গা কবিতাটি সুব্রত পালের রচনা।

এছাড়াও আমার দুর্গা কবিতা আরো অনেকেই লিখেছেন। যেহেতু আমার দুর্গা আমরা যে দেবী দুর্গাকে পূজা করি তার সঙ্গে প্রত্যেকটি নারীকে তুলনা করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে এ সকল নারীদেরকে যে সমাজ বিভিন্নভাবে অবমাননা করে সেই সকল বিষয়ে এই কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে। পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নিষ্পেষিত।

এই কারণে এ সকল নারীদেরকে পুরো মুখে অধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। অনেক টাকা পয়সা খরচ করে নারী শক্তিকে অর্থাৎ দেবী দুর্গাকে আমরা শ্রদ্ধা করে থাকি ভক্তি করে থাকি কিন্তু বাস্তব সমাজে যদি এর উল্টা চিত্র হয় সে সকল অসঙ্গতিগুলোই এই আমার দুর্গা কবিতায় উত্থাপিত হয়েছে। তাই এ সকল বিষয়কে অবলম্বন করেই দেখানো হয়েছে যে আমার দুর্গা কবিতা সম্পর্কে।

সকল অসঙ্গতিকে দূরে সরিয়ে সকল নারীকে মাতা স্বরূপ বনস্বরূপ কন্যা স্বরূপ দেখার কথা বলা হয়েছে। সমাজে এই নারীদেরকে কিভাবে খুন হত্যা ধর্ষণ ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি চলে আসছে সেই সকল অসঙ্গতি যাতে সমাজ থেকে দূরে চলে যায় সকলেই যেন প্রত্যেক নারীকে টিভির সাথে তুলনা করে তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন সে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। নারীকে কখনোই পণ্যের সাথে তুলনা করা যাবে না।

একুশ শতকের পৃথিবীতে এসে সেই পৌরাণিক যুগের দেবী দুর্গার অসহায়ত্বের কথা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ বা কোটি কোটি টাকা খরচ করে দেবী দুর্গাকে আমরা আহবান করি কিন্তু সমাজের দুর্গা গুলিকে আমরা অবহেলা করি এ সকল অসঙ্গতি থেকে সমাজকে উঠিয়ে আনার বিষয়ে বা এ সকল অসঙ্গতি দূর করার জন্য এই কবিতা অবতারণা হয়েছে।

তাহলে আমরা এখন দেখে নিতে পারি এই আমার দুর্গা কবিতাটি। তাহলে দেখুন-
তোমার দুর্গা আমার দুর্গা – সুব্রত পাল

তোমার দুর্গা মহালয়া ভোরে শরৎ মাখছে গায়
আমার দুর্গা এখনো দেখছি ফুটপাতে জন্মায়।

তোমার দুর্গা অকালবোধন একশো আটটা ফুল
আমার দুর্গা দূর থেকে দ্যাখে খিচুড়ির ইস্কুল।

তোমার দুর্গা আগমনী গান গিরিরাজ কন্যার
আমার দুর্গা ঘর দোর ভাসা বাঁধ ভাঙা বন্যার।

তোমার দুর্গা প্রতিবার আসে বাবা মা’র বাড়িতেই
আমার দুর্গা মা’র কোলে পিঠে, বাবার খবর নেই।

তোমার দুর্গা টেক্কা দিয়েছে এবার থিমের পুজো
আমার দুর্গা ইট বয়ে বয়ে এক্কেবারেই কুঁজো।

তোমার দুর্গা হুল্লোড়ে মাতে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে
আমার দুর্গা বাঁচতে শিখছে অতীতকে ছুঁড়ে ফেলে।

তোমার দুর্গা আলো ঝলমল চেনে না অন্ধকার
আমার দুর্গা রোজ সেজে গুজে খোঁজে তার সংসার।

তোমার দুর্গা শপিং মলের কফির ধোঁয়ায় ওড়ে
আমার দুর্গা চা বানাচ্ছে, তিন রাস্তার মোড়ে।

তোমার দুর্গা বহুজাতিকের বহুজনহিতায়চ
আমার দুর্গা কালকে যেমন, আজো তথৈবচ।

তোমার দুর্গা ছবির ফ্রেমের শিউলি এবং কাশে
আমার দুর্গা এখনো আশায় কেউ যদি ভালোবাসে।

তোমার দুর্গা ধুনুচি নাচের ঢ্যাম্‌ কুড় কুড় ঢাকে
আমার দুর্গা ঘুরেই মরছে দশচক্রের পাকে।

About Arafat Mia 985 Articles
Bangla Date Today is the best website for providing Bangla date information based on Bengali calendar. This website publishes all type of date information in Bengali, English and Arabic Calendar.

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*