গোপাল ভার হলো বাংলা গল্পের একটি অপার সম্ভার। আসলে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনামলে গোপাল ভাঁড় ছিলেন কৃষ্ণনগর রাজ্যের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ভাঁড়। আরো ভালো করে বললে বলা যায় যে গোপাল ভাঁড় ছিলেন মধ্যযুগে নদীয়া অঞ্চলের একজন প্রখ্যাত রম্য গল্পকার ভাঁড় ও মনোরঞ্জনকারী। এবং এই গোপাল ভাঁড়ের ইতিহাস এত মধুর এটাও বলা যায় না। তবে তিনি অনেক বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলেন এটি ইতিহাস থেকেও বোঝা যায়।
গোপাল ভাঁড়ের আসল নাম ছিল গোপাল চন্দ্র প্রামানিক। এই গোপাল ভাঁড় তৎকালীন সময়ে অর্থাৎ অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদীয়া জেলার প্রখ্যাত রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় নিযুক্ত ছিলেন। গোপাল ভার কে ইতিহাস সৎ এবং বুদ্ধিমান ব্যক্তি হিসেবেই দেখিয়ে থাকে। গোপাল ভাঁড়ের বুদ্ধি এবং সৎ সাহসের কারণে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাকে তাদের সভা শব্দের নবরত্ন দের মধ্যে একজন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
আজও আমরা আমাদের ছোট ছোট বাচ্চা কিশোর এদেরকে বিভিন্ন ধরনের গোপাল ভাঁড়ের গল্প শোনালে তারা মনোযোগ দিয়ে শুনে থাকে। এবং গোপাল ভাঁড়ের বেশিরভাগ গল্পগুলোই ছিল রম্য রচনা এবং বুদ্ধিদীপ্ত প্রয়োগ সংক্রান্ত। তাই সে সকল গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলি বর্তমান সমাজেও ততোধিক প্রচলিত রয়েছে। ছোট বড় সকলের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয়
গোপাল ভাঁড়ের গল্প গুলো। সেই অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এতোটুকু তার গল্প গুলির গ্রহণযোগ্যতা কমেনি। তাই এখনো দেখা যায় যে বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালগুলোতে গোপাল ভাঁড়ের গল্প দিয়ে চলে থাকে অনেক অনুষ্ঠান। এবং বাংলাদেশের অথবা বাঙালি সমাজে অনেক প্রবাদ এখনো এই গোপাল ভাঁড়ের বিভিন্ন গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কারণে আপনারা যারা আজকে আমাদের এখানে গোপাল ভাঁড়ের গল্প দেখার জন্য এসেছেন আপনারা অবশ্যই ঠিক কাজটি করেছেন।
আমরা আপনাদেরকে এখন গোপাল ভাঁড়ের গল্প অবশ্যই দেখাবো এবং গোপাল ভাঁড়ের ছবিও আপনাদের দেখাবো। সত্যি সত্যি বাংলা সাহিত্যের বা বাংলা ভাষার গল্পগুলোকে অনেক সমৃদ্ধ করেছে এই গোপাল ভাঁড়ের রম্য রচনা বা গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলি। এখনো গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলি বিভিন্ন বই আকারে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রকাশিত হয়ে থাকে। এই কারণে দেখা যায় যে গোপাল ভার সত্যি সত্যি বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে একটি অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে উঠেছে।
তাই আপনারা যেহেতু আজকে গোপাল ভাঁড়ের ছবি আপনারা দেখতে এসেছেন আপনাদেরকে অবশ্যই গোপাল ভার সম্পর্কে কিছু কথা না বললে এই গোপাল ভাঁড়ের ছবির গুরুত্ব খুব একটা বুঝতে পারবেন বলে মনে করা হয় না। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভার ভার গোপাল ভাঁড়ের জীবনের করুন কাহিনী রয়েছে। অর্থাৎ গোপাল ভাঁড়ের খুব অল্প বয়সেই বাবা মারা যান এবং সেই চিতায় তার মা সহমরণে যান। এরপর গোপাল ভাঁড়ের বড় ভাই কে তারা দাসত্ব করতে বাধ্য করে এবং গোপাল ভার কে এক ডাকাত দল অপহরণ করে তাদের সঙ্গে নিয়ে যায়।
গোপাল ভার সেখান থেকে উদ্ধার পেয়ে এক ভদ্রমহিলার কাছে আশ্রয় নেয় এবং তিনি তাকে লালন পালন করে থাকেন। পরবর্তীতে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় ভার হিসেবে তিনি যোগদান এবং রাজা তার সততায় মুগ্ধ হয়ে নবরত্নদের মধ্যে একজন নিযুক্ত করেছিলেন।
গোপাল ভার সব সময় রাধা কৃষ্ণচন্দ্র কে সৎ পরামর্শ দেওয়ার কারণেই রাজা এবং রানী মা উভয়েই তাকে পছন্দ করতেন। আর এই কারণেই তিনি রাজা রানী প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। পরবর্তীতে শোনা যায় যে কোন এক কারণে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে আচরণ করেন এবং এটি গোপাল ভাঁড়ের সঠিক মনে হয়নি। তাই রাধাকে তিনি নিষেধ করায় রাধা কৃষ্ণচন্দ্র তাকে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করেন।
তারপরে এই পৃষ্ঠা চন্দের রাজ্যে গোপাল ভার কে আর কোনদিন দেখা যায়নি। রাজার বাড়ির সামনে এখনো গোপাল ভাঁড়ের একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবং কৃষ্ণনগর পৌরসভার নতুন একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করেন কৃষ্ণনগর পৌরসভা। এই হল গোপাল ভাঁড়ের কাহিনী। তাই আপনারা এখন গোপাল ভাঁড়ের ছবিগুলো দেখে নিতে পারবেন আমাদের এখান থেকে। গোপাল ভাঁড়ের ছবি যদি ডাউনলোড করে নিতে ইচ্ছা করেন তাহলেও আপনি অবশ্যই নিয়ে নিতে পারবেন।
Leave a Reply