অনুকূলচন্দ্র চক্রবর্তী যিনি আবার ঠাকুর শ্রী অনুকূলচন্দ্র নামে ও পরিচিত। ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের জন্ম ১৪ই সেপ্টেম্বর ১৮৮৮ সালে পাবনা জেলার হেমায়েতপুর গ্রামে। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি ধর্মগুরু। এই ধর্মগুরুর শিষ্য বর্তমানে নেহায়েত কম নয়। কারণ তার প্রতিষ্ঠিত সৎসঙ্গ আশ্রমের দুইটি শাখার মাধ্যমে এখনো ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের শিষ্য প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থাৎ বলা চলে ঠাকুর শ্রী অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা।
এই বাঙালি ধর্মগুরু ব্রিটিশ ভারতের বঙ্গপ্রদেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশ ভারত সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার শিষ্যরা ছড়িয়ে রয়েছে। এ কারণে এখনো ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের ভাব শিষ্যরা বেড়েই চলেছে। ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের পিতার নাম হলেন সিপ চন্দ্র চক্রবর্তী এবং মাথা হলেন মনমোহিনী দেবী। ঠাকুর শ্রী অনুকূলচন্দ্র যেহেতু পাবনা জেলায় হেমায়েতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই কারণে তার প্রাথমিক জীবন সেখান থেকেই শুরু হয়।
অর্থাৎ আমাদের ঠাকুর শ্রী অনুকূলচন্দ্র পাবনা হেমায়েতপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি পাবনায় ইনস্টিটিউট এর ভর্তি হন। এবং তিনি এই পাবনা ইনস্টিটিউট থেকেই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি বর্তমান ভারতের অমিতাবাদের রায়পুর উচ্চ বিদ্যালয় অল্প সময়ের জন্য পড়াশোনা করেন। পরে সেখান থেকে তিনি এসে বর্তমান ২৪ পরগনা জেলার নৈহাটিতে নৈহাটি উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হন এবং সেখানে তিনি
1905 সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। তারপর তিনি আবার চলে যান কলকাতার ন্যাশনাল মেডিকেল স্কুলে। সেখানে তিনি হোমিওপ্যাথিতে ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্র দেওঘরে তপোবন বিদ্যালয়, দাতব্য চিকিৎসালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, publicing house, ছাপাখানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ঠাকুর শ্রী শ্রী অনুকূলচন্দ্র পাবনার হেমায়েতপুরে এবং দেওঘরে দুইটি সৎসঙ্গ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
এই সৎসঙ্গ আশ্রমের বা প্রতিষ্ঠানটির নামের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন যে আসলে সৎ ও সংযুক্তির মাধ্যমে তদগতি সম্পন্ন যারা তারাই হলো সৎসঙ্গী। আর তাদের মিলন ক্ষেত্রেই হল এই সৎসঙ্গ আশ্রম। সেজন্য তিনি বর্তমান বাংলাদেশে এবং ভারতের দেওঘরে দুইটি সৎসঙ্গ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। এই আশ্রম গলি থেকে এখনো বিভিন্ন শিষ্যরা সেবা পেয়ে থাকেন। পাবনার আশ্রম তিনি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেছিলেন।
বর্তমানে পাবনার হেমায়েতপুরে তার যে সৎসঙ্গ আশ্রম রয়েছে সেখানে তপবন সংস্কৃত কলেজ নামে একটি কলেজ রয়েছে। এখান থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গরা সংস্কৃতি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে। এইতো অপমান সংস্কৃত বিদ্যালয়টি বাংলাদেশ সংস্কৃত ও পালিশিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত। সৎসঙ্গ আশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শুরু হয় মানুষ তৈরীর আবাদ। কর্মের মাধ্যমে যোগ্যতার মানুষ গড়ে তোলাই হল এই আশ্রমের মূল লক্ষ্য।
জীবনের শেষের দিকে ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের আধ্যাত্মিক প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দলে দলে মানুষ এসে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করতে থাকে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, গুলজারীলাল নন্দা এ সকল মহৎ ব্যক্তিগণ সৎসঙ্গ আশ্রম পরিদর্শন করে সৎসঙ্গ আশ্রমের প্রশংসা করেছিলেন।
এসব কারণেই হয়তো বর্তমান সময়েও ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের সৎসঙ্গ আশ্রমটি মাথা উঁচু করে বাংলাদেশের বুকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষগণ এখনো সৎসঙ্গ আশ্রমে যাচ্ছে এবং ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের আধ্যাত্মিকতা বিষয়গুলি জেনে নিজেকে ধন্য মনে করছেন। বঙ্গীয় এই মহাপুরুষ ধর্মগুরু ১৯৬৯ সালের ২৭শে জানুয়ারি ৮১ বছর বয়সে তারই প্রতিষ্ঠিত আশ্রম অর্থাৎ ভারতের দেওঘরের সৎসঙ্গ আশ্রমে দেহত্যাগ করেন। এখন আপনারা যেহেতু আমাদের এই পোস্টটিতে এসেছেন ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের ছবি দেখার জন্য।
আপনারা অবশ্যই এখন ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের ছবি অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ের তার যে ছবিগুলো রয়েছে সেই ছবিগুলি দেখতে পাবেন। তাহলে চলুন আমরা এখন ঠাকুর শ্রী অনুকূল চন্দ্রের বিভিন্ন সময়ে তোলা ছবিগুলো আপনাদেরকে প্রদর্শন করাই। আর দেরি না করে আমরা এখন এই ছবিগুলো দেখতে থাকি। এ ধরনের যেকোনো তথ্য পাওয়ার জন্য আপনারা অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।
Leave a Reply