উৎসব

পাপমোচন একাদশীর ব্রতকথা

একাদশীর দিনে সকল হিন্দুধর্মানুসারী উপবাস পালন করে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তার লীলা বিলাসের প্রথম থেকেই একাদশী উপবাসের প্রথা প্রবর্তন করে এসেছিলেন। আমাদের দেশে তথা পুরো পৃথিবীতে এই ব্রত সকল মানুষেরাই প্রায় পালন করে থাকেন। বর্তমান যুগ যেহেতু কলিযুগ, এই যুগে নাম সংকীর্তন হলো একমাত্র মুক্তির পথ। যতটুকু সম্ভব নিজেকে সংযত রাখতে হবে। সব সময় হরিনাম সংকীর্তন করতে হবে। সব দিন না হলেও একাদশী দিন অন্তত ঠাকুরকে আমরা মনেপ্রাণে ডাকতে পারবো এবং হরিনাম সংকীর্তনে মেতে থাকতে পারবো।

একাদশী তিথীকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হয়। তাই সেই সময় বিভিন্ন নামে একাদশী পালন করা হয়। তবে আষাঢ়, ভাদ্র ও কার্তিক মাসের শুক্লা একাদশী বিশেষ শুভ বলে গণ্য করা হয়। একাদশীর কথা পদ্মপুরাণে উল্লেখ করা আছে। এই তিথিতে বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। খাবারের ওপরও বিশেষ কিছু নিয়মাবলী মেনে চলতে হয়। পুরানে বলা হয়েছে যে, যে মানুষ একাদশীর দিন শস্য দানা গ্রহণ করে সে তার পিতা-মাতা ভাই ও গুরুদের হত্যাকারী হয় এবং সে যদি বৈকুন্ঠেলোকেও উন্নত হয় তবুও তার অধঃপতন হয়।

পাপমোচন একাদশী ফাল্গুনের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে হয়ে থাকে এই একাদশী হলো বছরের শেষ একাদশী।

এই একাদশী কিভাবে করতে হয় তার একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা নিচে দেওয়া হল:

এই তিথিতে সূর্য ওঠার আগেই ঘুম থেকে উঠতে হয়। তারপর কুশ ও তিল ভেজানো জলে স্নান করতে হয়। একাদশীর পুজো সেরে তবে ভোজন এর ব্যবস্থা করা হবে না করতে পারলেও ক্ষতি নেই। চাল গম খেতে নিষেধ করে অনেকেই এই একাদশীতে।দুধ,ফল,মিষ্টি খাওয়া যেতে পারে। তবে পরের দিন সকালে নারায়ণের পূজা করতে হয়।

এই ব্রথের মাধ্যমে সহজে পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। হোলিকা দহন ও চৈত্র নবরাত্রির মধ্যে আসে এই একাদশী তিথি। পাপ মোচন একাদশীকে আবার কখনো কখনো বলা হয়ে থাকে গুরুভার একাদশী। যখন এই একাদশী বৃহস্পতিবার পড়ে তখনই এই নামকরণ করা হয়। তবে মনে করা হয় এই একাদশীর উপবাস অত্যন্ত কল্যাণকর। মনের সকল কামনা পূর্ণ করতে সহায়তা করে। এই দিনের উপাস্য একমাত্র দেবতা হলো নারায়ন। একাদশীতে উপবাস করলে নারায়ণের বরদান মিলে। এছাড়াও একাদশীর দিনে শ্রী বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করা হয়ে থাকে।

এই একাদশীর ব্রত কথা:

চৈত্ররথ বনে অপ্সরেরা নপুংসকদের সঙ্গে থাকতেন। সেখানে মেধাবী নামে এক সন্ন্যাসী তপস্যা করছিলেন। তিনি ছিলেন শিব ভক্ত। একদিন এক সুন্দরী অপ্সরা থাকে মুগ্ধ করে। পরবর্তীতে তারা ঘনিষ্ঠ হন। তারপর একদিন অপ্সরা বেশি থেকে স্বর্গে যাওয়ার অনুমতি চান। তখন বেশি বুঝতে পারেন যে ৭৫ বছর ভোগে কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি। তখন তিনি অপ্সরা কে অভিশাপ দেন। কিন্তু এই অভিশাপ থেকে পাপমুক্ত হওয়ার উপায় ও তাকে বলে দিয়েছিলেন। আর সেটাই হলো পাপ মোচন একাদশী ব্রত পালন করা।

আমরা সবাই জানি একাদশী করলে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হয়। পাশাপাশি আমাদের শরীরের পক্ষে অনেক ভালো উপকার হয়। এই দিনে মন থেকে ভগবানের কাছে যদি কিছু চাওয়া হয় অবশ্যই ভগবান ভক্তের মনের আশা পূরণ করে। এই দিনে অবশ্যই গীতা পাঠ এবং মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ভগবানের স্তুতি করা উচিত।

সবাই তার নিজ সাধ্যমত এই ব্রত পালন করে থাকেন। যারা এই ব্রত পালন করেন তারা খুব সহজে ভগবানের কাছে পৌঁছে যেতে পারেন, এবং তাদের মনস্কামনাও তাড়াতাড়ি পূর্ণ হয়। পরিশেষে এটাই বলতে পারি যে, একাদশী সম্পর্কিতো সকল ধরনের তথ্য জানতে এক্ষুনি আমাদের পেজটা ডাউনলোড করে বিনামূল্যে সব তথ্য সংগ্রহ করুন।

Arafat Mia

Bangla Date Today is the best website for providing Bangla date information based on Bengali calendar. This website publishes all type of date information in Bengali, English and Arabic Calendar.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
%d bloggers like this: