প্রতিটি জিনিসেরই একটি ধর্ম থাকে। প্রাণীর পশুর বা পাখির আগুন এর বাতাসের জলের সব কিছুরই আলাদা আলাদা ধর্ম রয়েছে। যেমন আগুনের ধর্ম গ্রহণ করা। বাতাসের ধর্ম প্রবাহিত হওয়া। জলের ধর্ম সিক্ত করা। তেমনিভাবে আমি যদি মানুষ হই তাহলে মানুষের ধর্ম হলো মনুষত্ব। তাই প্রতিটি ব্যক্তি মানুষের যে ধর্ম থাকে সেটি মানুষের ধর্ম। মনুষ্যত্ব অর্জন করাই হলো মানুষের আসল ধর্ম এটি বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের নীতিবাক্য পড়ে থাকি এবং কবি সাহিত্যিক বা দার্শনিক এরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের জ্ঞানগর্ভ কথা বলে থাকেন। তারাই বলেছেন যে প্রাণ থাকলে প্রাণী হওয়া যায় কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না। তাই বলা যায় যে মানুষের ধর্ম সবসময় একটি হওয়া উচিত আর তা হল মনুষ্যত্ব অর্জন করা। মানবতার জয়গান করা। মধ্যযুগের কবি বড়ু চন্ডীদাস বলেছিলেন যে,” সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই”।
তাই তার কথায় যদি আমরা ধরে নিতে পারি তাহলে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ হিংসা খুন ধর্ষণ রাহাজানি ইত্যাদি কোন কিছুই থাকবে না। এছাড়াও বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক দার্শনিক এবং বিভিন্ন ধর্মের মহাপুরুষগণ তাদের ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় দেখা গেছে যে তারা এই কথাটিই বোঝাতে চেয়েছেন। তারপরেও আপনারা যারা আজকে আমাদের এই পোস্টে এসেছেন যে আমার ধর্ম কি সেটা জানার জন্য।
আপনারা অবশ্যই আমাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে গেলে আপনি বুঝে নিতে পারবেন বা এই প্রশ্নটির উত্তর অবশ্যই পাবেন যে আপনার ধর্ম কি এই বিষয়টি। পৃথিবীতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের বসবাস রয়েছে। অর্থাৎ আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলা যায় যে পৃথিবীতে যে ধর্মগুলি রয়েছে সেই সকল ধর্মগুলির অনুসারী ব্যক্তিবর্গই সবচেয়ে বেশি। তবে এ সকল ধর্মের অনুসারী ব্যতীত অনেক মানুষ পৃথিবীতে রয়েছে যারা কোন ধর্মের অনুসারী নয়। তবে আমরা তাদেরকেও একটি ধর্মের কথা বলতে পারি যে তাদের যুক্তি দর্শন অনুযায়ী সেই সকল ব্যক্তিবর্গ চলে থাকেন।
পৃথিবীতে অনেক ধর্ম গুলির মধ্যে প্রধানত চারটি ধর্ম বা চারটি ধর্মের অনুসারী মানুষজন বেশি। এই চারটি ধর্মের অনুসারী মানুষ জনের মধ্যে রয়েছে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান। এখন আপনি যদি এই চারটি ধর্মের মধ্যে আপনার ধর্ম কি সেটা জানতে চান তাহলে আমরা আমাদের চাইতে আপনি নিজেই বেশি করে বুঝতে পারবেন যে আপনার ধর্ম কি এই বিষয়টি। তবে যদি আপনার ধর্ম কি এটা জানার জন্য আমাদের কাছে জানতে চান তাহলে একথা আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে আপনার ধর্ম হলো মনুষ্যত্ব অর্জন করা।
পৃথিবীর সকল গোত্রের সকল শ্রেণীর সকল মানুষকে লিঙ্গ বৈষম্যভেদ জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকেই আপনি সুদৃষ্টিতে এক নজরে দেখবেন। তাহলে আপনি অবশ্যই মনুষ্যত্ব অর্জন করেছেন বলেই মনে করা হয়। এছাড়াও মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হলে মানুষের যে মানবীয় গুণাবলী রয়েছে সেই গুণাবলী কে অবশ্যই অর্জন করতে হয়। এখন বেলা যেতে পারে যে মানুষের গুণাবলী কি। মানুষের গুণাবলী হলো যে সকল বিষয়গুলি বুদ্ধি বিচার বিশ্লেষণ দিয়ে আপনার ঠিক মনে হবে সেই কাজটি করতে হবে তবে আপনার ঠিক মনে হলেও অন্য জনের কাছে যদি সেটি দেখার কারণ হয়ে থাকে দুঃখের কারণ হয়ে থাকে সেটি অবশ্যই করা যাবে বলে মনে করি না।
তাই অন্যকে দুঃখ কষ্ট বেদনা দিয়ে আপনি মনুষ্যত্ব অর্জন করবেন এতেও কখনো মনে করা হয় না। তাই পৃথিবীতে যদি আমরা সকলেই মনুষ্যত্ব অর্জন করতে পারতাম বা মানুষের যে ধর্ম সেটি মেনে চলতে পারতাম তাহলে কখনই এ ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ বা আরো অন্যান্য যে একটি গোষ্ঠী আরেকটি গোষ্ঠীর উপর সন্ত্রাস সৃষ্টি করা এটা কখনো সম্ভব হতো না। তাই আমরা এ কথা বলতে পারি যে সকলেই সকলের প্রতি সমান শ্রদ্ধাবোধ করলে দেখালে অবশ্যই মনুষ্যত্ব বলে মনে করা হয়ে থাকে। আর এটিই হল আপনার প্রধান ধর্ম।
9:59 AM
Leave a Reply