মা সারদা হলেন শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সহধর্মিনী। যে কয়জন বাঙালি সাধক পুরুষ রয়েছেন তাদের মধ্যে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কে অবতার রূপে গণ্য করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে যাদুকের ভগবান শ্রী রামচন্দ্র এবং দ্বাপর যুগের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মিলিত অবদান কলিযুগে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কালি এবং কৃষ্ণ কে একই রূপে দেখেছিলেন।
অর্থাৎ যিনি কালি, তিনিই শ্রীকৃষ্ণ তাই জগতে তিনি কালী মহিমা সকলকে জানালেও কৃষ্ণ মহিমা জানাতেও তিনি ভুল করেননি। আর এই বাঙালি মহাপুরুষ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সহধর্মিনী হলেন আমাদের মা সারদা দেবী। মা সারদা দেবী মা কালীর সাধনভোজনে সর্বদা স্বামীর পাশেই থেকেছেন। তাই মা সারদা প্রতিটি বাঙালির মনিকোঠায় মায়ের আসনে বসেছেন। মা সারদা স্বামীর সকল শিষ্যের কাছে তিনি গুরু মাতা বলে পরিচিত ছিলেন।
তিনি সকল শিশুকে ই অত্যন্ত স্নেহ আদর করতেন। এই কারণে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সকল শিশুগণ অত্যন্ত শ্রদ্ধার সহিত গুরু মাতা কে সম্মান করেছেন এবং তার আদেশ, নিষেধ, উপদেশ, মেনে চলেছেন। সারদা দেবী ২২ ডিসেম্বর 1853 সালে জন্মগ্রহণ করেন। এই বাঙালি মহীয়সী নারী ছিলেন উনিশ শতকের বিশিষ্ট সেই ধর্ম গুরুর সাধন সঙ্গিনী বা স্ত্রী।
আবার সারদা দেবীকে আরেকটি উপাধিতেও ভূষিত করা হয় আর তা হল রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সংঘ জননী রূপে। এই সংঘের সকল সদস্যগণ সারদা দেবীকে শ্রীমা বলে ডাকতেন। এই মহীয়সী নারীর কারণেই শ্রীরামকৃষ্ণ আন্দোলনের বিকাশ এবং প্রচারে অনেকটা দূর এগিয়েছেন বলে মনে করা হয়ে থাকে।
মা সারদা দেবীর জন্ম হয় জয়রাম বাটি গ্রামে। শ্রীমায়ের বিয়ের আগে নাম ছিল সারদামণি মুখোপাধ্যায়। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে এই মহীয়সী নারীর বিবাহ সম্পন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু কৈশোরের ও উপান্তে উপনীত হওয়ার পূর্বে তিনি স্বামীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাননি। এই মহীয়সী নারীর জীবনে খাদ্যের মতে, গার্হস্থ ও সন্ন্যাস জীবনের আদর্শ স্থাপন করার জন্য তারা উভয়ে অবিচ্ছিন্ন ব্রহ্মচর্য অনুশীলন করে জীবন যাপন করে গেছেন। পরবর্তীতে যখন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
দেহত্যাগ করেন বা মৃত্যুবরণ করেন তারপর অবশিষ্ট জীবন সারদা দেবী অতিবাহিত করেন জয়রামবাটি ও কলকাতার উদ্বোধন ভবনে। এই নারীর সমগ্র জীবন জুটে ছিল তার প্রাণপ্রিয় স্বামী ভ্রাতা ও ভ্রাতৃ পরিবারবর্গ। তবে তার স্বামীর সকল শীর্ষ গণ তার সন্তানরূপ ছিল তার কাছে। এজন্যই তিনি সংঘ পরিবারের সাথে যুক্ত ছিলেন অর্থাৎ রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন। বাঙালি মহীয়সী নারীদের মধ্যে যদি প্রথম সারির কাউকে গণনা করা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এই মহীয়সী নারীর স্থান এক নম্বরে বলেই মনে করা হয়ে থাকে।
ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে তিনি সমানভাবে ভালবেসে গেছেন। এই কারণে প্রতিটি বাঙালির মনে মা সারদা দেবীর অকুন্ঠ ভালোবাসা রয়েছে। আর এই কারণে আপনারা যারা আজকে আমাদের এখানে মা সারদা দেবীর ছবি দেখতে এসেছেন আপনারা অবশ্যই এখান থেকে মা সারদার ছবি দেখে নিতে পারবেন। সমগ্র জীবনে মা সারদা দেবীর যে কয়টি ছবি পাওয়া যায় সকল ছবিগুলো আপনাদের সামনে অবশ্যই এখানে আমরা তুলে ধরব। কারণ মা সারদা দেবী যে সময় পৃথিবীতে ছিলেন সেই সময় ব্যাপকভাবে ছবি তোলার তেমন কোন প্রচলন ছিল না।
যদিও তিনি আধুনিক যুগের ঘোরার দিকের মানুষ ছিলেন তারপরও সেই সময় ব্যাপক হারে ক্যামেরা ব্যবহার হতো না। তাই তার যে কয়টি দুর্লভ ছবি পাওয়া যায় সেই ছবিগুলো থেকে আপনাদেরকে আমরা সকল ছবি দেখাবো। তাই আপনারা যদি মা সারদা দেবীর ছবিগুলো এক এক করে দেখে নেন এবং দেখতে দেখতে যদি কোন ছবি আপনাদের প্রয়োজন হয় না আমার তাহলে অবশ্যই সেটা নিয়ে নিতে পারবেন। অর্থাৎ ডাউনলোড করে নেওয়া যায় আমাদের এখান থেকে। আর ডাউনলোড করে নিতে আপনাদের আলাদা কোন অর্থের প্রয়োজন হবে না।
Leave a Reply