আমার দেশ ভারতবর্ষ রচনা

প্রতিটি শিক্ষার্থীর উচিত তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা। তাই আজকে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য আমার দেশ ভারত বর্ষ রচনাটি প্রদর্শিত হল।ভূমিকা: “ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা, তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা”। আসলে যে কোন দেশের সকল নাগরিকের জন্য তার দেশটি অবশ্যই সেরা দেশ হিসেবেই পরিলক্ষিত হয়।
প্রত্যেক জনের কাছে দেশ আবেগময় একটি বিষয়। নিজের মাতৃভূমি বা পিতৃভূমির প্রতি সকলেরই ভালোবাসা রয়েছে এবং সেই দেশের প্রতি তাদের অবশ্যই একটি দায়িত্ব এবং কর্তব্য থাকে। পৃথিবীতে সর্বমোট ১৯৫ টি দেশ রয়েছে। তার মধ্যে আমাদের ভারত বর্ষ একটি অনন্য দেশ হিসেবে ই শের মানচিত্রে মাথা উঁচু করে রয়েছে।
ভারতবর্ষ তথা আমাদের দেশের অবস্থান: পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত ভারত বর্ষ। প্রাকৃতিক নৈসর্গ এবং ভূ-প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এই ভারত বর্ষ। আমাদের দেশের উত্তর পূর্বে রয়েছে হিমালয় পর্বত শ্রেণী এবং উত্তর-পশ্চিমে কারাকোরাম এবং শিরোপাঞ্জাল এর মত বৃহৎ পর্বত শ্রেণী।
দক্ষিণ পূর্বে বঙ্গোপসাগর পশ্চিমে আরব সাগর আর সবচেয়ে দক্ষিণে রয়েছে সুবিশাল ভারত মহাসাগর। আমাদের দেশের প্রধান নদী হল গঙ্গা যমুনা সিন্ধু ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি। আমাদের দেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত চীন নেপাল ভুটান দক্ষিণের শ্রীলংকা পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার এবং পশ্চিমে পাকিস্তান রয়েছে। এছাড়াও আমাদের দেশের আশ্চর্যজনক ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে পৃথিবীতে এটি বেশ নামকরা দেশ হিসেবেই পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
আমাদের দেশের ইতিহাস: প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষের একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। এই বিশ্বে প্রাচীনকাল থেকে যত সভ্যতা গড়ে উঠেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সভ্যতা হলো ভারতীয় সভ্যতা। খ্রিস্টপূর্ব প্রায় 5000 বছর আগে থেকেই ভারতবর্ষের মানুষের উন্নত সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল বলে মনে করা হয়ে থাকে। এই দেশের সিন্ধু নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে সিন্ধু সভ্যতা। এ সকল সভ্যতা ইতিহাসের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়ার পর এই দেশে গড়ে ওঠে প্রাচীন বৈদিক সভ্যতা। বর্তমানে পৃথিবীর সকল অংশের সকল প্রকারের মানুষের মিলনে আমাদের ভারত বর্ষ হয়ে উঠেছে এক মহান দেশ।
ভারতবর্ষের ঐতিহ্য: আমাদের দেশের যেমন রয়েছে প্রাচীনকাল থেকেই সুপ্রাচীন ইতিহাস তেমনি ভাবে আমাদের এই দেশে প্রাচীনকাল থেকে বয়ে আনা এক গৌরবময় ঐতিহ্য। আমাদের এই ভারতবর্ষে পৃথিবীর প্রধান তিনটি ধর্মের উৎপত্তিস্থল। এই তিনটি ধর্ম হল বৈদিক সনাতন বা হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম এবং জৈন ধর্মের। এছাড়াও ভারতবর্ষে গড়ে উঠেছে একের পর এক অত্যন্ত সমৃদ্ধ দার্শনিক মতবাদ গুলি।
যে মতবাদ গুলি আজও পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষকে অবাক করে তুলে। এছাড়াও বলা যায় যে প্রাচীন ভারত বর্ষ ছিল জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ একটি দেশ। এই দেশে তখনই জন্ম নিয়েছিল গণিতবিদ আর্যভট্ট তিনি শূন্যের আবিষ্কার করেছিলেন। এছাড়াও চাণক্য এখানকারই একজন বিখ্যাত দার্শনিক। তার নীতি আজও পৃথিবীতে সমান কার্যকর বলে মনে করা হয়ে থাকে।
বৈচিত্র্যময় ভারত: ভারত বর্ষ প্রাচীনকাল থেকেই বৈচিত্র্যময় একটি দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে পরিগণিত হয়ে থাকে। একদিকে এই দেশটির যেমন রয়েছে হিমালয়ের মত সুউচ্চ পর্বতশ্রেণী, তেমনি রয়েছে সাগর, উপসাগর, মহাসাগর। আবার এই দেশেরই উত্তর-পূর্বে রয়েছে চেরাপুঞ্জির মত পৃথিবী বিখ্যাত আদ্র অঞ্চল। আবার পশ্চিমে রয়েছে রাজস্থানের মত উষ্ণ এবং শুষ্ক থর মরুভূমি।
পৃথিবীর বুকে আজকের ভারতবর্ষ: পৃথিবীর বুকে ভারত বর্ষ আজ সকলের জন্যই একটি নির্ভরযোগ্য দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দীর্ঘ ১৯০ বছর উপনিবেশিকতার শৃংখল ভেঙ্গে স্বাধীনতার মাত্র ৭৫ বছরেই বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছে। মহাকাশ গবেষণা থেকে শুরু করে প্রযুক্তিবিদ্যা চিকিৎসা সকল দেশেই এগিয়ে চলেছে।
উপসংহার: প্রাচীনকাল থেকেই ভারত বর্ষ পৃথিবীতে শান্তি সমৃদ্ধি জ্ঞান চর্চা এবং আন্তর্জাতিকতায় এর মধ্য প্রতীক হিসেবে পৃথিবীতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।