আমাদের এই ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন ধরনের মানুষের বসবাস। বিভিন্ন ধরনের আদি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বহুকাল পূর্ব থেকেই আমাদের এই অঞ্চলে বসবাস করে আসছে। এদের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হল সাঁওতাল। সাঁওতালরা এই অঞ্চলের আদিও আদিবাসী বলে মনে করা হয়ে থাকে। সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সাঁওতাল হুল হলো ১৯ শতকে ব্রিটিশ ভারতে সংগঠিত একটি ঔপনিবেশিক ও জমিদারি শাসনবিরোধী আন্দোলন।
এই সাঁওতাল বিদ্রোহে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়েছিল। এর সূচনা হয় ১৮৫৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ও বিহারের ভাগলপুর জেলায়। ১৮৫৫ সালে আসলে ইংরেজ শাসন চলছিল। সেই সময় স্থানীয় জমিদার মহাজন এবং ইংরেজদের রাজস্ব ও কৃষি নীতির বিরুদ্ধে সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলেন। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় চার মুরমু ভাই।
এই চার ভাই হল সিধু কানু চাঁদ ও ভৈরব। এই চার ভাই একসঙ্গে সেই সময় সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিল। অর্থাৎ ১৭৯৩ সালে বড়লাট গভর্নর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিসের প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে তাদের প্রাচীন স্থানান্তর চাষ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এবং এই প্রাচীন চাষ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই ভিতরে ভিতরে প্রত্যেকটি সাঁওতাল ভূষে উঠে তাদের বিরুদ্ধে। এবং তারই প্রতিফলন হিসেবে শুরু হয় সাঁওতাল বিদ্রোহ।
এই কারণে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের আগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করে তোলে। এবং এই বিদ্রোহ হতে গোটা ইংরেজ সরকার নড়েচড়ে বসে। তাদের শাসনের ভিড় নাড়িয়ে দেয় এই সাঁওতালরা। সাঁওতালদের দৃষ্টিতে ১৮৫৫ সালে সশস্ত্র সংগ্রাম করেছিল তাদের অধিকার আদায়ের জন্য। যে কোন মানুষের অধিকার আদায়ের করার জন্য অবশ্যই আন্দোলন করতে হয়। আন্দোলন না করে কোন কিছুই ইতিহাসে কেউ পেয়েছে বলে মনে করা হয় না।
বাংলায় একটা কথা আছে যে অধিকার আদায় করতে হয় অধিকার কেউ দিয়ে দেয় না এমনি এমনি। এই কারণে অধিকার আদায় করার জন্য যেকোনো সময় আমাদের অবশ্যই যার কাছ থেকে অধিকার আদায় করে নিতে হবে সে দাবি অন্তত করতে হবে। সাঁওতালদের দৃষ্টিতে ১৮৫৫ সালে তারা সশস্ত্র সংগ্রাম করেছিল তাদের অধিকার আদায়ের জন্য।
তারা এই যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল সাধারণত ইংরেজ, মহাজন, ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। সাঁওতালদের এই যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল তারা ব্রিটিশ সৈন্য এবং তাদের দেশের ব্যবসায়ী মুনাফা কর এবং মহাজনদের বিভিন্ন নিয়ম নীতি থেকে নিজেদের রক্ষা করা এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। সাঁওতালপুলের ইতিহাস হতে জানা যায় জামিন-ই ছিল সাঁওতালদের নিজস্ব অঞ্চল।
সাঁওতাল বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য দিক হলো ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৩০ জন প্রায় ৩০ হাজার সাঁওতাল কৃষকেরা বীরভূমের ভবনডিহি থেকে সমতল ভূমির উপর দিকে কলিকাতা অভিমুখে পদযাত্রা করেন। ভারতের ইতিহাসে এটাই প্রথম গণপদযাত্রা হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। এরপর ৭ জুলাই দেখি থানার মহেশলাল দারোগা সহ 19 জনকে হত্যা করে বিরোধীরা।
পরে হকে নির্মূল করার জন্য কোম্পানির বড় লাটগণ ৩৭শ, সপ্তম, ৩১শ, রেজিমেন্ট হিল রেঞ্জার্স ৪৩, ৪২ ও ১৩ রেজিমেন্ট প্রভৃতিকে ব্যবহার করেছিল। পরে সাঁওতাল নেতাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য কমিশনার প্রধান নায়কের জন্য ১০ হাজার টাকা সহকারী নায়কের প্রত্যেকের জন্য 5000 টাকা এবং বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় নায়কদের জন্য এক হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন।
এইভাবে সাঁওতাল বিদ্রোহ দমন করে তখনকার ইংরেজ সরকার। তাই আপনারা যারা আজকে সাঁওতাল বিদ্রোহের ছবি আমাদের এখান থেকে দেখে নিতে এসেছেন এখন আপনারা আমাদের এখান থেকে সাঁওতাল বিদ্রোহের ছবিগুলো দেখে নিতে পারেন। আমরা আপনাদেরকে এখন এখান থেকে সাঁওতাল বিদ্রোহের যে চিত্র সে সময় ফুটে উঠেছিল বা যে সমস্ত ছবি এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় তা আপনারা এখন এখান থেকে দেখে নিতে পারবেন।
এবং এই সকল ছবিগুলো যদি আপনারা ডাউনলোড করে নিতে চান তাহলেও পারবেন। এ ধরনের যেকোনো তথ্য বা ছবি ডাউনলোড করে নেওয়ার জন্য আপনারা অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে আমাদের পাশে থাকবেন তাহলে এ ধরনের সকল প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি আপনারা দেখে নিতে পারবেন।
Leave a Reply